হাউস কার্যক্রম
কলেজের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকার মধ্যে একতা ও সম্প্রীতি তৈরী করা, শিক্ষা ও সৃজনশীল কর্মকান্ডে দলবদ্ধভাবে উন্নতিসাধন, সহজে ও নির্ভুলভাবে কর্ম সম্পাদনের প্রচেষ্টা, সকল কাজে গতিশীলতা ও সুষ্ঠু প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব তৈরী করা এবং পড়াশুনার পাশাপাশি বিভিন্ন সহশিক্ষা কর্যক্রমে ছাত্র-ছাত্রীদের উৎসাহ সৃষ্টি করা প্রভৃতি কাজের লক্ষ্যে কলেজের হাউস কার্যক্রম পরিচালিত হয়। কলেজের সকল ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, ইশা খাঁ, তিতুমীর, শের-এ-বাংলা ও নজরুল এই ৪ টি হাউসের যে কোন একটির সদস্য হয়। সকল ছাত্র-ছাত্রীকে কলেজ ইউনিফর্মের সাথে নিজ হাউসের নির্ধারিত কালারের হাস ব্যাজ ধারণ করতে হয়। হাউসের কালার হচ্ছে- ইশা খাঁ-গোলাপী, তিতুমীর সবুজ, শের-এ-বাংলা-হলুদ ও নজরুল-লাল। শিক্ষা কার্যক্রমের ন্যায় খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক, সাধারণ জ্ঞান, কুইজ, বিতর্ক, পিটি-প্যারেড প্রভৃতি সহশিক্ষা কার্যক্রমে পয়েণ্টের ভিত্তিতে প্রতিবছর এই ৪টি হাউসের মধ্যে থেকে চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ হাউস নির্বাচন করা হয়।
বিএনসিসি
দেশের বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালদের ছাত্র-ছাত্রীদের দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার দায়েত্বে সামরিক বাহিনীর সহযোগী দ্বিতীয় সারির প্রতিরক্ষা বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ১৯৭৯ সালে নতুন রূপে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর। নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের পাশাপাশি দেশের সামাজিক ও উন্নয়নমুলক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে অংশগ্রহন ও শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালনে পুলিশ বাহিনীকে সহায়তা করা প্রভৃতি কাজে এই কোরের যথেষ্ঠ সুখ্যাতি রয়েছে। এই কোরের সকল ক্যাডেটরা স্বেচ্ছাসেবার ভিত্তিতে বিনা খরচে সামরিক বাহিনীর প্রাথমিক প্রশিক্ষণ লাভ করতে পারে। শ্রেষ্ঠ ক্যাডেটরা দেশের বিভিন্ন স্থানে, এমনকি রাষ্ট্রীয়ভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সফর করে থাকে। দক্ষ ও যোগ্য ক্যাডেটদের মধ্য থেকে বিশেষ বাছাইয়ের মাধ্যমে সামরিক বাহিনীতে অফিসার হিসাবে ভর্তির সুযোগ রয়েছে। বিএএফ শাহীন কলেজ চট্টগ্রামের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের বিএনসিসির এয়ার ইউনিটে ক্যাডেট হিসেবে ভর্তির সুযোগ রয়েছে।
এয়ার স্কাউট
১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর তত্ত্বাবধানে প্রতিষ্ঠিত হয় এয়ার স্কাউট। দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের সমন্বয়ে গঠিত এয়ার স্কাউটের প্রধান কাজের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে শৃঙ্খলা রক্ষার কাজে সহায়তা প্রদান করা এবং জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক দিবসের তাতপর্য ও গুরুত্ব প্রচারে র্যালীতে অংশগ্রহণ করা, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করা প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। কলেজের আভ্যন্তরীণ বিভিন্ন অনুষ্ঠান এবং জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক বিভিন্ন দিবস সুষ্ঠুভাবে উদযাপন করার কাজে এই ইউনিট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এইসব ইউনিট পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন কলেজের প্রশিক্ষন প্রাপ্ত শিক্ষক।
গার্লস গাইড
আর্ত মানবতার কল্যাণ, সামাজিক কর্মকান্ড ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করার লক্ষ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীদের নিয়ে গঠিত হয় গার্লস গাইড। ১৯৮২ সালে ৮ আগষ্ট বিএএফ শাহীন কলেজ চট্টগ্রামে প্রতিষ্ঠিত হয় গার্ল গাইডের একটি ইউনিট। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত অত্যন্ত নির্ভরযোগ্যতার সাথে এই কলেজের গার্ল গাইডের দায়িত্ব পালন করে আসছেন এই ইউনিট।
রেঞ্জার
প্রতিদিন একটি ভাল কাজের ব্রত নিয়ে সামাজিক ও সেবামূলক কর্মের শপথ নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীদের নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ গার্ল গাইড এসোসিয়েশনের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত রেঞ্জার ইউনিট। ২০১০ সালে ২জুন ৩৬ জন শিক্ষার্থী নিয়ে বিএএফ শাহীন কলেজে রেঞ্জার ইউনিট গঠিত হয়। বর্তমানে এই ইউনিটের দায়িত্ব পালন করছেন ............ ।
কম্পিউটার ক্লাব
তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে অধিকতর দক্ষতা বৃদ্ধি এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তি সংক্রান্ত ও কম্পিউটার প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের লক্ষ্যে গড়ে তোলা হয় শাহীন কম্পিউটার ক্লাব। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর শুধুমাত্র কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্য থেকে বিশেষ বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই ক্লাবের সদস্য হিসেবে মনোনীত করা হয়। কম্পিউটার ক্লাশের পাশাপাশি পূর্ব নির্ধারিত সময় অফ-পিরিয়ডের সময় এই ক্লাবের সদস্যরা সি-প্রোগ্রামিং, কম্পিউটার হার্ডওয়ার ও ইন্টারনেটের উপর কম্পিউটার ল্যাব ব্যবহারের সুযোগ পেয়ে থাকে। কম্পিউটার বিভাগের প্রভাষক কম্পিউটার ক্লাবের মডারেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বিজ্ঞান ক্লাব
বিজ্ঞান শিক্ষাকে ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে অধিকতর আগ্রহ সৃষ্টি করা, বিজ্ঞানভীতি দূর করা, নিত্যনতুন বিজ্ঞানমূলক সৃজনশীলতা ও শিল্পকর্ম তৈরীতে উৎসাহ প্রদান এবং বিজ্ঞানভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করার লক্ষ্যে গঠন করা হয় বিজ্ঞান ক্লাব। আমাদের তরুণ শাহীনরা বিজ্ঞান বিষয়ক সৃজনশীল কাজে দেশে ও বিদেশে বিশেষভাবে অবদান রাখছে।
ডিবেট ক্লাব
পুঁথিগত শিক্ষার পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীদের সহশিক্ষা কার্যক্রমে উৎসাহিত করার জন্য অত্র কলেজে গঠন করা হয়েছে বিএএফ শাহীন কলেজ ডিবেট ক্লাব। ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যত জীবনে দক্ষ, বাগ্মী নেতৃত্ব দানে সক্ষম ও যুক্তিবাদী করে গড়ে তোলার লক্ষ্য হচ্ছে এই ডিবেট ক্লাবের মূল উদ্দেশ্য।
কুইজ ক্লাব
ছাত্রজীবন শেষে বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সফলতা অর্জন, কর্মজীবনে প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন এবং পাঠ্যবইয়ের নির্ধারিত সিলেবাসের পাশাপাশি সাধারণ জ্ঞানের পরিধি আরও সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে বিভিন্ন ক্লাশের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে শাহীন কুইজ ক্লাব। এই ক্লাবের রয়েছে বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য অর্জন।
খেলাধুলা
বিএএফ শাহীন কলেজ ঢাকার ছাত্র-ছাত্রীরা শারীরিক শিক্ষার পাশাপাশি স্কুল ও কলেজভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক খেলাধূলায় স্বক্রিয় অংশগ্রহণ করে থাকে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ড আয়োজিত ২০১২ সালের আন্তঃস্কুল ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় বিএএফ শাহীন কলেজ ঢাকা মহানগরী চ্যাম্পিয়ন ও বিভাগীয় পর্যায়ে রানার্স-আপ হওয়ার গৌরব অর্জন করে। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রদের সমন্বয়ে গঠিত ফুটবল, ক্রিকেট, ব্যটমিন্টন ও ভলিবল এই ৪টি টীমে প্রায় শতাধিক খেলোয়াড় রয়েছে।
শাহীন বাদক দল
বিএএফ শাহীন কলেজ ঢাকার ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত বিভিন্ন ক্লাসের ছাত্র-ছাত্রীর সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে ‘শাহীন বাদক দল’। কলেজের বার্ষিক ও আন্তঃহাউস ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, হাউসের প্যারেড প্রশিক্ষণ, প্রতিদিনের শারীরিক শিক্ষা (পিটি) প্রভৃতি কাজে এই বাদক দল অংশগ্রহণ করে থাকে। সাইড ড্রাম, বেইজ ড্রাম, টেনর ড্রাম, টেমবুরি ড্রাম, প্রভৃতি বাদ্যযন্ত্রের সমন্বয়ে সুসজ্জিত দলটি এই সব অনুষ্ঠানে চমৎকার ও আকর্ষনীয় বাদ্য পরিবেশন করে থাকে।
শাহীন নৃত্য ও সংগীত দল
বিএএফ শাহীন কলেজ এর ১ম থেকে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়মিত পড়াশুনা ও ক্লাসের পাশাপাশি নৃত্য ও সঙ্গীত চর্চার সুযোগ রয়েছে। এই বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীরা কলেজের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নবীন বরণ, বিদায় সংবর্ধনা, বিশেষ দিবস উদযাপণ, প্রখ্যাত ও আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বের কলেজ পরিদর্শন প্রভৃতি ক্ষেত্রে নৃত্য ও সঙ্গীত পরিবেশন করে থাকে। এই দল সশস্ত্রবাহিনী পরিবেশিত জনপ্রিয় অনুষ্ঠান “অনির্বাণ”সহ বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যনেলের সাংস্কৃতিক বিষয়ক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে থাকে।
কলেজ বার্ষিকী
সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চাকে সমৃদ্ধশালী ও সমুন্নত করতে প্রতিবছরি বিএএফ শাহীন কলেজ প্রকাশ করছে কলেজ বার্ষিকী ‘শাহীন’। কলেজের শিশু শ্রেনী থেকে উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীরা, শিক্ষক-শিক্ষিকারা গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, চিত্রাংকন, বাস্তব অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ কাহিনী প্রভৃতি বিষয়ক লেখা দিয়ে সমৃদ্ধ করে কলেজ বার্ষিকী শাহীনকে। এছাড়া শাহীনে কলেজের বার্ষিক কর্মসূচী ও গুরত্বপূর্ণ কর্মকান্ড, শিক্ষা ও সহশিক্ষা কার্যক্রম, ফলাফল ও গৌরবময় অর্জন প্রভৃতি সচিত্র আকারে প্রকাশিত হয়। সাধারণত এটি বছরের শেষের দিকে প্রকাশিত হয়।